ঢাকা,মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪

কক্সবাজার জেলা প্রশাসন ম্যাজিস্ট্রেট সঙ্কটে ব্যাহত কার্যক্রম

964-300x225শাহেদ ইমরান মিজান ::
কক্সবাজার জেলা প্রশাসনে চরম ম্যাজিস্ট্রেট সঙ্কট সৃষ্টি হয়েছে। ম্যাজিস্ট্রেট সঙ্কটের কারণে প্রশাসনের নিয়মিত কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। একই সাথে অতিরিক্ত কাজ সামলাতে গিয়ে দায়িত্বরত ম্যাজিস্ট্রেটদের খেতে হচ্ছে হিমশিম। জেলা প্রশাসন সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
জেলা প্রশাসনের সংস্থাপন শাখা সূত্র জানায়, কক্সবাজার জেলা প্রশাসনে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের পদ রয়েছে ২২টি। তার মধ্যে এ গ্রেড-১৭ জন, বি- গ্রেড-৫ জন। কিন্তু বর্তমানে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিযুক্ত রয়েছেন ১২জন। এই ১২ জনের মধ্যে দায়িত্বরত রয়েছে মাত্র ৫জন। বাকি ৭ জনের মধ্যে ৬ জনই রয়েছে প্রশিক্ষণে। একজন রয়েছেন মাতৃকালীন ছুটিতে।
সূত্র মতে, বর্তমানে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের নিযুক্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা হলেন- এম. এম. মাহমুদুর রহমান, তুষার আহমেদ, মাহমুদুল হক, এবিএম এহছানুল মামুন, মোজাম্মেল হক রাসেল, উপমা ফারিসা, শাহরীন ফেরদৌসী, ফাহমিদা মোস্তফা, আবু বাক্কার ছিদ্দিক, মো: রাফিউল আলম, নীলিমা রায়হানা ও পিএম ইমরুল কায়েস। তাদের মধ্যে শুধুমাত্র ৫ জনই বর্তমানে দায়িত্ব পালন করছেন। তাদের মধ্যে ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করছেন এম. এম. মাহমুদুর রহমান, শিক্ষা ও আইসিটি সহকারী কশিনারের দায়িত্ব পালন করছেন তুষার আহমেদ, কুতুপালং শরণার্থী ক্যাম্পের ইনচার্জের দায়িত্ব পালন করছেন মাহমুদুল হক, নেজারত ডেপুটি কালেক্টর’র (এনডিসি) দায়িত্ব পালন করছেন এবিএম এহছানুল মামুন, সহকারী কমিশনার হিসেবে রয়েছেন শুধুমাত্র মোজাম্মেল হক রাসেল।
অন্য ৭ জনের মধ্যে প্রশিক্ষণে রয়েছেন ৬জন। তারা হলেন- উপমা ফারিসা, শাহরীন ফেরদৌসী, ফাহমিদা মোস্তফা, আবু বাক্কার ছিদ্দিক, মো: রাফিউল আলম ও পিএম ইমরুল কায়েস। তারা সবাই ৬ মাসের প্রশিক্ষণে রয়েছেন। এরই মধ্যে তিন মাস অতিবাহিত হয়েছে। আরো তিনমাস পর তারা কর্মস্থলে ফিরবেন বলে সূত্র জানায়। এছাড়া মাতৃকালীন ছুটিতে রয়েছেনর নীলিমা রায়হানা। তিনি জানুয়ারির শেষের দিকে ছুটিতে গেছেন। মাতৃকালীন ৬ মাসের ছুটি শেষে আগামী জুলাই মাসে তিনি কর্মস্থলে ফিরবেন। একদিকে পদ সংখ্যার অর্ধেক পদায়ন অন্যদিকে নিযুক্তদের অধিকাংশই কর্মস্থলের বাইরে থাকায় ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা, বিভাগীয় কর্ম সম্পাদন, ভিআইপি সমাদরসহ জেলা প্রশাসনের আনুষঙ্গিক কার্যক্রমে চরম বিঘœ ঘটছে।
জেলা প্রশাসন সূত্র মতে, ম্যাজিস্ট্রেট সঙ্কটের কারণে জেলার আইন-শৃঙ্খলা তদারকি করা যাচ্ছে না। বন্ধ রয়েছে অবৈধ উচ্ছেদ অভিযান, মোবাইল কোর্ট। বীচ ম্যানেজম্যান্ট সঠিকভাবে করা যাচ্ছে না, পিএসসি ও জেএসসি পরীক্ষার হল সঠিকভাবে তদারক করা যায়নি। চলমান এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার হলও সঠিকভাবে তদারকি করা যাচ্ছে না। তদারিক করা যাচ্ছে না জেলায় চলমান সরকারের উন্নয়ন কাজ। জেলা প্রশাসনের ১২টি সেকশনে কর্মকর্তার পদ শূন্য থাকায় বন্ধ রয়েছে অনেক কাজ। এছাড়া ভিআইপি ও ভিভিআইপি প্রটৌকলসহ জেলার সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থায় বিঘœ ঘটছে।
জেলা প্রশাসনের জে.এম শাখা সূত্রে জানা যায়, ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনার জন্য নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিযুক্ত রয়েছেন শুধুমাত্র মোজম্মেল হক রাসেল। তাঁর নেতৃত্বে গত এক সপ্তাহে শুধুমাত্র ৪টি ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করতে সক্ষম হয়েছে জেলা প্রশাসন।
ম্যাজিস্ট্রেট সঙ্কটের কথা স্বীকার করে জেলা প্রশাসক মো: আলী হোসেন বলেন, ‘সঙ্কট নয় চরম ম্যাজিস্ট্রেট সঙ্কট সৃষ্টি হয়েছে। এই জন্য আমি খুবই সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছি। কয়েকবার মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছি। এখন পর্যন্ত কোন সমাধান হয়নি। আমি প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’

পাঠকের মতামত: